
শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনের নাম মোহনবাগানের নামে হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। সূত্রের খবর, রাজ্যের ‘এনওসি’ (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) ইতিমধ্যেই মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখন কেন্দ্রের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এই ঐতিহাসিক প্রস্তাব। আপামর বাঙালির নজর এখন সেদিকেই।
মোহনবাগান ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভায় ক্লাবের সচিব দেবাশিস দত্ত জানান, “শ্যামবাজার মেট্রোর নাম মোহনবাগানের নামে করার প্রস্তাবে আমরা কাজ শুরু করেছি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত উদ্যোগী হয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে নো অবজেকশন দিয়েছেন। তবে রেল ম্যানেজমেন্টের অনুমোদন ছাড়া এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে না। এটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার, তাই কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে।”
আগের বছর মোহনবাগানের নামে শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনের নামকরণের প্রস্তাবটি প্রথম উঠে আসে বার্ষিক সভায়। বর্তমানে ক্লাব কমিটি এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে, কলকাতার মেট্রো মানচিত্রে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নেবে মোহনবাগান ক্লাবের ঐতিহ্য।
মোহনবাগান: কলকাতার গর্ব, ঐতিহ্যের প্রতীক
শ্যামবাজারের সঙ্গে মোহনবাগানের সম্পর্ক বহু পুরনো। ১৮৮৯ সালে মোহনবাগান ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় মোহনবাগান স্পোর্টিং ক্লাব নামে। এক বছর পর, প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রফেসর এফ জে রো-র পরামর্শে নাম পাল্টে হয় মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব। শ্যামবাজার অঞ্চলে যে রাস্তার নাম ‘মোহনবাগান রো’, সেটি সেই রো সাহেবের নামেই। এখানেই বিখ্যাত শিল্ড জয়ী মোহনবাগানের এগারো জন খেলোয়াড় প্র্যাকটিস করতেন।
ক্লাবের লোগোতেও পরিবর্তন এসেছে সময়ের সঙ্গে। প্রথমে যেখানে ছিল বিশ্রামরত বাঘের প্রতীক, পরে তা পালটে করা হয় পালতোলা নৌকা। এই ক্লাব শুধু ফুটবলের নয়, বাঙালির গর্ব ও ঐতিহ্যের প্রতীক। দুর্গাপুরের ‘মোহনবাগান অ্যাভিনিউ’, শিলিগুড়ি এবং কলকাতার ‘মোহনবাগান লেন’ ও ‘মোহনবাগান রো’-র পর, শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশন যদি ক্লাবের নামে হয়, তবে এটি হবে এক অনন্য সংযোজন।
মেট্রো স্টেশনের নামকরণ শুধু একটি প্রতীকী পদক্ষেপ নয়, এটি মোহনবাগানের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এখন সময়ের অপেক্ষা—রেল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন মিললেই কলকাতার বুকে তৈরি হবে ঐতিহ্যের এক নতুন অধ্যায়।