ময়দানে একটি অধ্যায়ের ইতি। অবসরের ঘোষণা দিলেন শিল্টন পাল, যিনি আর কখনো পেশাদার ফুটবলে গ্লাভস পরবেন না। তাঁর শেষ ম্যাচে জয়, রেইনবো এসির হয়ে ২-০ গোলে জর্জ টেলিগ্রাফকে হারিয়ে শিল্টন পাল কেরিয়ার শেষ করলেন ক্লিনশিট দিয়ে।
মোহনবাগানের হয়ে ১৪ বছরের দীর্ঘ যাত্রায় শিল্টন পাল খেলেছেন আড়াইশোরও বেশি ম্যাচ। বহু ম্যাচে ক্লাবের জয় নিশ্চিত করেছেন তিনি, আর সমর্থকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন ‘বাজপাখি’ হিসেবে। ২০০৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত মোহনবাগানের গোলরক্ষক ছিলেন শিল্টন। মোহনবাগান ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন তিনি এবং ছিলেন ইন্ডিয়ান সুপার লিগেরও অংশ।
৩৬ বছর বয়সে শিল্টন পাল অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, যা অনেকের কাছেই তাড়াতাড়ি মনে হতে পারে। তাঁর ছিপছিপে শরীর এখনো চনমনে, গালের কাঁচাপাকা দাড়ি ছাড়া বয়সের অন্য কোনো চিহ্ন নেই। দলের প্রয়োজনে এখনও তিনি শরীর শূন্যে ছুঁড়ে দিতে প্রস্তুত। এবারের কলকাতা ফুটবল লিগে রেইনবোর হয়ে বেশ কিছু ম্যাচে অংশ নিয়েছেন।
কেরিয়ারের সেরা সময়ের বহু স্মৃতি তাঁর মনে আছে, যেমন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পূর্ণ গ্যালারি। কিন্তু ব্যারাকপুর স্টেডিয়ামে কেরিয়ারের শেষ ম্যাচে গুটিকয়েক দর্শকই উপস্থিত ছিল। অন্যান্য দিনের মতোই সেদিনও ম্যাচের আগে প্র্যাকটিস করেছেন শিল্টন। রোদ ঝলমল ব্যারাকপুরের আকাশে ছেঁড়া মেঘের ফাঁকে তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জীবনের এক অধ্যায় শেষ করার।
প্রায় ১৮ বছরের এই দীর্ঘ যাত্রা আজ শেষ হলো। এই রেইনবো দলের অনেক সদস্যই শিল্টনের খেলা দেখে বড় হয়েছেন, তাঁদের কাছে তিনি নায়কের মতোই। মাঠে উপস্থিত ছিলেন শিল্টনের মা, স্ত্রী, সন্তান ও অন্যান্য আত্মীয়রা। ম্যাচ শেষে ছেলেকে কোলে তুলে নিলেন শিল্টন। দুই দলের ফুটবলারদের সঙ্গে গ্ৰুপ ছবি তোলা হলো। জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লেন শিল্টন পাল, সমাপ্ত করলেন এক গৌরবময় অধ্যায়।