এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭-এর যোগ্যতা অর্জনের আগে ভারতীয় ফুটবলে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত। হংকংয়ের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নামার আগেই জাতীয় দলের প্রধান কোচ মানোলো মারকোয়েজ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি দায়িত্ব ছাড়তে পারেন। বাংলাদেশ ম্যাচে গোলশূন্য ড্র এবং দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে হতাশ হয়েই এই সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দেন তিনি। সুনীল ছেত্রীর প্রত্যাবর্তন সত্ত্বেও ভারতীয় দলের দুর্বলতা কাটেনি—এটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল।

হংকংয়ের বিরুদ্ধে পরাজয়ের পর ভারতের এশিয়ান কাপের মূলপর্বে কোয়ালিফাই করার সম্ভাবনা কার্যত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাকি চারটি ম্যাচ জিততে না পারলে, আসর থেকে ছিটকে যাওয়াই নিশ্চিত। এমন পরিস্থিতিতে মানোলো যে দায়িত্ব ছাড়তে চান এবং তুলনামূলক কম চ্যালেঞ্জিং ক্লাব ফুটবলে ফিরতে চান, সেটা অনুমান করাই যাচ্ছিল। হংকং ম্যাচের পরই তিনি ফেডারেশনের কাছে পদত্যাগের ইচ্ছা জানান।

তবে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) তড়িঘড়ি কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। প্রথমত, ফেডারেশন চাইছে, ইগর স্টিমাচের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে—মানে, দায়িত্ব ছাড়ার পর যেন মানোলো প্রকাশ্যে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কিছু না বলেন। দ্বিতীয়ত, মানোলোকে সরিয়ে নতুন কোচ খুঁজে পাওয়া। এই প্রক্রিয়ার জন্যই ২৯ জুনের বদলে কার্যকরী কমিটির বৈঠক পিছিয়ে ২ জুলাই করা হয়েছে।

এই বৈঠকেই সম্ভবত মানোলো মারকোয়েজের স্থলাভিষিক্ত কোচ নিয়োগে সিলমোহর পড়বে। কারণ, আগামী অক্টোবরেই রয়েছে ভারতের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচগুলিই নির্ধারণ করবে, ভারত এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিতে পারবে কি না। তাই নতুন কোচকে দ্রুত দায়িত্ব দিয়ে প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া জরুরি।

নতুন কোচ হিসেবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি নাম আলোচনায়। তবে সবদিক বিচার করলে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বাংলার অভিজ্ঞ ও সাফল্যপ্রাপ্ত কোচ সঞ্জয় সেন। যদিও সম্প্রতি সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা দলের কোচ হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, তবে সঞ্জয় সেন এই দায়িত্বে সম্মতি দিতে চাননি। ধারণা করা হচ্ছে, জাতীয় দলের কোচ হওয়ার সম্ভাবনার জন্যই তিনি রাজ্যের দলে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে এখনই কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চাননি।

অন্যদিকে আইএসএলে সফল কোচ খালিদ জামিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে বিশেষ আগ্রহ দেখাননি। আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের উপরেও ফেডারেশনের আস্থা কম, কারণ নবীন ভারতীয় ফুটবলারদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং ধৈর্য তাঁর কম বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি বিদেশি কোচদের বিপুল পারিশ্রমিকও একটি বড় বাধা। ইভান ভুকোমানোভিচের নাম শোনা গেলেও, তাঁকে এই দায়িত্বে দেখা যাবে না বলেই ধারণা।

সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন সঞ্জয় সেন। শেষ সিদ্ধান্তের জন্য এখন শুধু অপেক্ষা ২ জুলাইয়ের বৈঠকের।

Enable Notifications OK No thanks