বর্তমান যুগের ভারতীয় রাজনীতির যে পটভূমিকা এক চূড়ান্ত অস্বস্তিকর এবং দম বন্ধ করার পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে, তা একপ্রকার আমাদের সবাইরি জানা। এই চূড়ান্ত এক সামাজিক এবং রাজনৈতিক অবক্ষয়ের যুগ ছুঁয়ে গেলো ভারতীয় ফুটবলকেও। যদিও এর আগে অনেকবারই খেলাধুলোর ভেতরে রাজনীতির রং মেশানো হয়েছে এবং হবেও এই দেশে, কিন্তু সেইটা ছিলো ভেতরে ভেতরে। আজ একদমই প্রকাশ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় ফুটবল পেজে তা দেখা গেলো।
গত পরশু নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে। যেখানে দেখা যায় আরএসএস চিফ ডক্টর মোহন ভগবতের সাথে তিনি সাক্ষাৎ করেন, যা নিতান্তই রাজনৈতিক ঘটনা। সেই পোস্টে তিনি ভারতীয় ফুটবল দলের ইনস্টাগ্রাম একাউন্টকে ট্যাগ করেছেন। ফলে সেই পোস্ট ফুটে উঠেছে ভারতীয় ফুটবল দলের অফিসিয়াল ইন্টাগ্রমেও। যদিও বিতর্কের পর তিনি সেই পোস্ট থেকে ট্যাগ সরিয়ে দেন। তবে গতকাল আবারও নজরে আসে সেই একই ভুল। বিজেপির একটি দলীয় অনুষ্ঠানের ছবি পোস্ট করার সময় আবারও তিনি এআইএফএফের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম একাউন্টকে ট্যাগ করেন। প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্তও সোশ্যাল মিডিয়ায় জ্বল জ্বল করছে সেই ছবি। পরপর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নেটিজেনরা। একটি রাজনৈতিক দলের পোস্ট ভারতীয় ফুটবলের সোশ্যাল মিডিয়ায় কেনো বার বার পোস্ট হচ্ছে সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সবাই।
আরও পড়ুন: জাতীয় দলে দুই প্রধানের আধিপত্য! মূল দলে থাকবে কোন কোন খেলোয়াড়?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত কল্যাণ চৌবে। এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট হবার পরেও রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন তিনি। ব্যাক্তিগত জীবনে কে কী করবেন তা নিয়ে কথা বলার অধিকার কারোরই নেই। তবে কেনো বার বার রাজনীতি সংক্রান্ত ছবি ভারতীয় ফুটবলের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট গুলোতে শেয়ার করেন তিনি? কেনইবা বার বার একই ভুল করবেন এত বড় দায়িত্বে থাকা একজন ব্যাক্তিত্ব? অনেকেই বলছেন ভারতীয় ফুটবলের মাধ্যমে বিজেপি নিজেদের প্রমোশন করছে। অনেকে আবার কল্যাণ চৌবেকে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথাও বলেছেন।
এতসব ঘটনার পর হয়তো নিজের প্রোফাইল থেকে সেই পোস্ট সরিয়ে দেবেন এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে। কিন্তু তাতে কি মুছে যাবে ভারতীয় ক্রীড়া জগতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ? ভারতে এইসব জিনিস নতুন কিছু নয়। বহু জায়গায় দেখা গেছে ট্রফি নিয়ে ছবি তোলার জন্য মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে খেলোয়ারদের। অনেক জায়গায় আবার দেখা গেছে মাঠে বড়ো অপরাধ করার পরেও কোনো নেতার ঘনিষ্ঠ হবার কারণে কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি সেই খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে। ভারতীয় ক্রীড়া জগতে এইসব নোংরা রাজনীতি কি আদৌ থামবে? উত্তর নেই কারো কাছেই।