ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) শুরুটা আশানুরূপ ছিল না। ডুরান্ড কাপে হতাশাজনক পারফরম্যান্স এবং টানা ছয় ম্যাচে জয়ের মুখ না দেখার পরে দলের কোচিংয়ে পরিবর্তন আনতে হয়। কার্লেস কুয়াদ্রাতের জায়গায় দায়িত্ব পান স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন (Oscar Bruzon)। তাঁর অধীনেই এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ থেকে ঘুরে দাঁড়ায় লাল-হলুদ ব্রিগেড। শুধু আন্তর্জাতিক মঞ্চেই নয়, ইন্ডিয়ান সুপার লিগেও ইস্টবেঙ্গল নিজেদের পুরনো ছন্দ ফিরে পায়।
সম্প্রতি মহামেডান স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে ডার্বি ম্যাচে ড্র করে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে টানা দুই ম্যাচে জয় পায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথের রাজ্যের ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে সেই জয়রথ থেমে যায়। অনবদ্য লড়াই করেও শেষ মুহূর্তে হেরে মাঠ ছাড়তে হয় লাল-হলুদকে। ম্যাচের ফলাফলের পাশাপাশি রেফারির কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কোচ অস্কার ব্রুজন এবং শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার (Debabrata Sarkar)।
কোচের অভিযোগ
ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের সামনে অস্কার ব্রুজন সরাসরি রেফারির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন,
“আমাদের ছোট দল হিসেবে দেখা হচ্ছে। আমাদের ফুটবলারদের মাঠ থেকে বের করে দেওয়া সহজ মনে করছে। আমাদের বিরুদ্ধে পেনাল্টি দেওয়া সহজ, কিন্তু আমাদের পক্ষে তা করা কঠিন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “দু’ম্যাচ আগে নন্দকুমারের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছিল। রেফারিরা ভালো করেই জানে কারা আহত হওয়ার ভান করে। আমাদের ফুটবলারকে লাল কার্ড দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে যে প্রতিপক্ষ ছটফট করছিল, সে সঙ্গে সঙ্গেই উঠে দাঁড়ায়। এই ধরণের সিদ্ধান্তই ম্যাচের ফলাফলে বড় পার্থক্য তৈরি করে।”
শীর্ষকর্তার প্রতিক্রিয়া
রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে দেবব্রত সরকারও নিজের ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন,
“শুধু লাল কার্ড নয়, ম্যাচের বিভিন্ন সময়ে আমাদের অনেক ফাউল ধরা হয়েছে, কিন্তু প্রতিপক্ষের ক্ষেত্রে তা হয়নি। আমাদের হলুদ কার্ড হয়েছে, ওদের হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের মনে হয় রেফারিকে রিক্রুট করতে না পারার জন্য ভুল করেছি। হয়তো বাকিরা সেটা করেছে। এমন রেফারিং চলতে থাকলে, দল যতই ভালো খেলুক, কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া সম্ভব নয়।”
রেফারির ভূমিকা নিয়ে ওঠা এই প্রশ্ন শুধুমাত্র ইস্টবেঙ্গল নয়, গোটা ভারতীয় ফুটবলের মান নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিল। তবে দল এখনও লিগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যাচ্ছে, এবং সামনে রয়েছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ। এখন দেখার, এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়ায় লাল-হলুদ ব্রিগেড।