
শেষমেশ কাটল জট, স্থির হলো ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) মরশুমের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ – ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) বনাম মোহনবাগানের (Mohun Bagan SG) ডার্বি। দীর্ঘ আলোচনার পর ১১ জানুয়ারি নির্ধারিত তারিখেই অনুষ্ঠিত হবে এই ঐতিহাসিক ম্যাচ, তবে এবার কলকাতা নয়, ভেন্যু গুয়াহাটি স্টেডিয়াম।
প্রথমদিকে কলকাতা ছাড়াও ভুবনেশ্বর, জামশেদপুর এবং দিল্লির মতো জায়গাগুলির নাম উঠে এসেছিল, কিন্তু নানা কারণে সেগুলি বাতিল করা হয়। শেষ পর্যন্ত গুয়াহাটিকেই চূড়ান্ত ভেন্যু হিসেবে নির্বাচন করেছে আইএসএল কর্তৃপক্ষ। কলকাতার বাইরে ডার্বি নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক চলছিল, তবে প্রশাসনিক জটিলতার কারণে গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন ১১ জানুয়ারি কলকাতায় ম্যাচ আয়োজন সম্ভব হয়নি।
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য সাগরদ্বীপে ৮ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে, যা ডার্বির জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অসম্ভব করে তোলে। তাই ম্যাচ বাতিল না করে কলকাতার বাইরে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে নতুন ভেন্যু নিয়ে আইএসএল কর্তৃপক্ষকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়।
ওডিশায় পূর্ব নির্ধারিত গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টের কারণে সেখানে ডার্বি আয়োজন সম্ভব হয়নি। দিল্লির শীতল আবহাওয়ার কারণে খেলোয়াড়দের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আর জামশেদপুরে দর্শকের উপস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা ছিল। এই সব কারণেই গুয়াহাটিকে চূড়ান্ত করা হয়।
তবে গুয়াহাটির ক্ষেত্রেও সমস্যা কম ছিল না। ১০ জানুয়ারি নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড এফসি বনাম পাঞ্জাব এফসির ম্যাচ থাকায় মাঠের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এখানেই জমবে কলকাতার দুই প্রধানের মহারণ।
উল্লেখ্য, গত ডার্বিতে মোহনবাগান ২-০ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে পরাজিত করেছিল। সেই ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের হোমগ্রাউন্ডে হলেও, মোহনবাগানের দাপট ছিল স্পষ্ট। এবার গুয়াহাটির মাঠে কি ইস্টবেঙ্গল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, নাকি মোহনবাগান তাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে?
এই ডার্বি শুধু ম্যাচ নয়, দুই দলের জন্য গৌরব এবং সম্মানের লড়াই। সমর্থকদের আবেগ তুঙ্গে, ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস এবং দলগত কৌশল চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে গুয়াহাটির মাঠে। কলকাতার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর এই লড়াই শুধু আইএসএল নয়, গোটা ভারতীয় ফুটবলেরই অন্যতম বড় আকর্ষণ হয়ে উঠবে।
১১ জানুয়ারি ফুটবলপ্রেমীদের চোখ থাকবে গুয়াহাটি স্টেডিয়ামের দিকে, যেখানে ইতিহাস সৃষ্টি করতে নামবে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। অপেক্ষা শুধু চূড়ান্ত বাঁশির।