ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (আইএসএল) চলতি মরসুমে শীর্ষস্থান দখলের লড়াই জমে উঠেছে। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবং বেঙ্গালুরু এফসি-র মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। একদিন শীর্ষে মোহনবাগান, তো পরের দিন বেঙ্গালুরু। এমন অবস্থায় দুই দলের কেউ পয়েন্ট হারালেই তাদের পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। উপরন্তু, নর্থইস্ট ইউনাইটেড ও পাঞ্জাব এফসি ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে। তাই এই সময় ড্র করাও দলগুলির কাছে প্রায় হারের সমান।
শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে চেন্নাইয়ান এফসি-র মুখোমুখি হবে সবুজ-মেরুন। তাদের একমাত্র লক্ষ্য জয়। গত পাঁচ ম্যাচে চারটি জিতেছে এবং একটিতে ড্র করেছে গতবারের লিগ শিল্ডজয়ী দলটি। চলতি মরসুমে বেঙ্গালুরু এফসি-কে ছাড়া আর কেউই মোহনবাগানকে হারাতে পারেনি। লিগ টেবলের শীর্ষে থাকা দুই দলের গোল পার্থক্যও সমান (৮)। তাই শীর্ষস্থান ধরে রাখতে এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট অপরিহার্য।
এদিকে, চেন্নাইয়ান এফসি-র সামনেও টিকে থাকার লড়াই। সেরা ছয়ের মধ্যে ঢোকার জন্য ওডিশা এফসি-র সঙ্গে তাদের কড়া প্রতিযোগিতা চলছে। দু’দলেরই সংগ্রহ ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট। গোলপার্থক্যে এগিয়ে ওডিশা রয়েছে ছয়ে এবং চেন্নাইয়ান রয়েছে সাত নম্বরে। শনিবার হারলে ওডিশার থেকে আরও পিছিয়ে পড়বে ওয়েন কোইলের দল।
মোহনবাগান শিবিরে বড় সুখবর, চোট সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে। আশিস রাই ও স্কটিশ মিডফিল্ডার গ্রেগ স্টুয়ার্ট সুস্থ হয়ে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত। কোচ হোসে মোলিনা জানিয়েছেন, তাঁরা অনুশীলনে স্বাভাবিক গতিতে ফিরেছেন। তবে গত ম্যাচে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত খেলা দীপেন্দু বিশ্বাস এই ম্যাচেও দলে থাকবেন কি না, তা নিয়ে কোচকে ভাবতে হচ্ছে।
গ্রেগ স্টুয়ার্ট ফিট থাকলে, জেমি ম্যাকলারেনের সঙ্গে তাঁর আক্রমণ ভাগে নামা প্রায় নিশ্চিত। স্টুয়ার্টের অনুপস্থিতিতে খেলেছেন দিমিত্রিয়স পেট্রাটস, তবে গোল বা অ্যাসিস্টের অভাবে তিনি হয়তো এবার রিজার্ভ বেঞ্চে থাকবেন।
পূর্ববর্তী ম্যাচে জামশেদপুর এফসি-কে একপেশে ফুটবলে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে মোহনবাগান। ম্যাচে ৬৪ শতাংশ বলের দখল ছিল তাদের হাতে, এবং ৮টি অন টার্গেট শট নিয়েছে দলটি। ডিফেন্ডার টম অলড্রেড, লিস্টন কোলাসো ও ম্যাকলারেনের গোলে সহজ জয় পেয়েছে তারা।
আইএসএলে মোহনবাগান ও চেন্নাইয়ান এফসি এখন পর্যন্ত আটবার মুখোমুখি হয়েছে। মোহনবাগান জিতেছে তিনবার, চেন্নাইয়ান দু’বার, এবং তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। দুই দলের মধ্যে গোলের পরিসংখ্যানেও সামান্য এগিয়ে কলকাতার দল (৯-৭)।
শনিবারের ম্যাচ যে শুধুই তিন পয়েন্টের লড়াই নয়, তা স্পষ্ট। একদিকে শীর্ষস্থান ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে সেরা ছয়ে প্রবেশের মরিয়া প্রচেষ্টা। যুবভারতীর সবুজ গালিচায় আরও একটি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা।