চলতি মরশুমে এই নিয়ে পাঁচ নম্বর দ্বৈরথ হতে চলেছে মোহনবাগান এসজি ও ওডিশা এফসি-র মধ্যে। এএফসি কাপে দু’বার দেখা হয়েছিল তাদের, যার মধ্যে প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠে একবার করে জয় পেয়েছিল তারা। চলতি আইএসএলে, দুই ম্যাচই ড্র হয়। এ মরশুমে কেউই এগিয়ে বা পিছিয়ে নেই। তাই আসন্ন আইএসএল সেমিফাইনালে দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা প্রবল। 

মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসও তা ভাল করে জানেন। তাই বারবার দলের ফুটবলারদের মনে করিয়ে দিচ্ছেন এই ম্যাচে জেতা সোজা হবে না এবং জিততে গেলে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে এবং তিনি এও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই ম্যাচ জিতে কলকাতায় ফিরতে পারলে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে সমর্থকদের কাছ থেকে তুমুল সমর্থন পাবেন তাঁরা, ফলে সেই ম্যাচে মানসিক ভাবে অনেক এগিয়ে থেকে নামতে পারবে তাঁর দল। 

গত কয়েক সপ্তাহ অসুস্থ ছিলেন। এখন সুস্থ। মাঠেও থাকছেন দলের সঙ্গে। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে তাই সাংবাদিক বৈঠকেও নিজেই এলেন হাবাস। ছিলেন পুরনো মেজাজেই। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, অতীতে কী হয়েছে, তা নিয়ে তাঁর মাথাব্যথা নেই। তিনি বেশি ভাবছেন বর্তমান নিয়ে। 

বলেন, “অতীতে কী হয়েছে, তা নিয়ে আমি এখন ভাবছিই না। আমরা এখন বর্তমানে আছি। ওডিশা যথেষ্ট ভাল দল। কারণ, ওদের একজন ভাল কোচ আছে, অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। আমাদের পক্ষে ম্যাচটা কঠিন হতে চলেছে”। 

কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ৯০ মিনিটেই জিততে হবে বলে, দলের ফুটবলারদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন হাবাস। বলেন “এই ম্যাচটাকে লিগের কোনও ম্যাচের মতোই খেলতে হবে। ৯০ মিনিটেই ম্যাচটা জিততে হবে আমাদের। এখনই দ্বিতীয় লেগ নিয়ে ভাবার কিছু নেই। প্রথম লেগে জেতাটা বেশি কঠিন। তবে প্রথম ম্যাচে হেরে গেলে চলবে না। লিগ ম্যাচে যে দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমেছি, এই ম্যাচেও সেই দায়িত্ব নিয়েই মাঠে নামতে হবে। সে জন্যই ৯০ মিনিটে ম্যাচটা জিতে এগিয়ে থাকতে হবে আমাদের”। 

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মতো প্রচণ্ড গরম পড়েছে সে রাজ্যেও। সোমবারই দুপুরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়স ছুঁয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে যখন ম্যাচ হবে, তখন অবশ্য এতটা গরম থাকার কথা নয়, ২৬-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়সের মতো তাপমাত্রা থাকতে পারে। তবে বাতাসে আর্দ্রতাও যথেষ্ট বেশি। তাই ক্লান্তি ফুটবলারদের একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে এই ম্যাচে। কিন্তু সেই অজুহাতও দিতে রাজি নন হাবাস।    

এই সমস্যারও সমাধান রয়েছে মোহনবাগানের হেড কোচের কাছে, “আবহাওয়া যে রকমই থাকুক, তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে আমাদের ছেলেদের। প্রতিপক্ষকেও তো একই পরিবেশে খেলতে হবে। এই নিয়ে কোনও অজুহাত দিলে চলবে না। তবে খেলোয়াড়দের শরীরের ওপর এর প্রভাব পড়বে। কিন্তু সে জন্য খারাপ পারফরম্যান্স দেখালে চলবে না। কৌশল ও টেকনিকে বেশি জোর দিতে হবে”, বলেন তিনি।

গত ম্যাচে দুর্দান্ত গোল পাওয়া লিস্টন কোলাসোও নিজের সেরাটা দিতে চান এই ম্যাচে। তিনি বলেন, “সেমিফাইনালে দলকে সবরকম ভাবে সাহায্য করতে চাই। দলকে গোল পেতে যেমন সাহায্য করতে চাই, তেমনই প্রতিপক্ষ যাতে গোল করতে না পারে, সে জন্যও দলকে সাহায্য করতে চাই। নিজের সেরাটা দিতে চাই”। 

গত মরশুম খুব একটা ভাল না কাটলেও এই মরশুমে ফর্মে ফিরেছেন তিনি। পরিশ্রম করেই যে নিজেকে ফিরিয়ে এনেছেন, তা জানিয়ে কোলাসো বলেন, “অফ সিজনে আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। গত মরশুমে কী কী ভুল করেছি, সে সব জেনে নিয়ে সেগুলো বিশ্লেষণ করে সেগুলো তা চেষ্টা করেছি। ফোকাসড ছিলাম, উন্নতি করার চেষ্টা করেছি। মানুষ ভুল থেকেই শিক্ষা নেয়, আমিও শিক্ষা নিয়েছি। যে কোনও খেলোয়াড়েরই উচিত নিজেকে উন্নতি করে তোলা। পরিশ্রম করলে তার ফল পাওয়া যায়”। 

এই মরশুমকেই সেরা বেছে নিচ্ছেন গোয়ার তারকা উইঙ্গার। বলেন, “এটাই আমার সেরা মরশুম। কারণ, আমি দলকে অনেক কিছু দিতে পেরেছি। আমার কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ মরশুম। এই প্রথমবার লিগশিল্ড জিতলাম। এ বার যদি কাপও জিততে পারি, তা হলে খুবই স্পেশ্যাল হয়ে উঠবে এই মরশুম”। 

Enable Notifications OK No thanks