টানা ব্যর্থতার পর স্বাভাবিক ভাবেই মহমেডান এসসি শিবিরে হতাশার কালো মেঘ দেখা দিয়েছে। তাই দলের খেলোয়াড়দের মানসিক ভাবে চাঙ্গা করাই এখন তাদের কোচ আন্দ্রেই চেরনিশভের কাজ। লিগ টেবলে আপাতত সবার নীচে তাঁর দল। ১১ ম্যাচে মাত্র পাঁচ পয়েন্ট তাদের। এ পর্যন্ত মাত্র একটি জয় পেয়েছে তারা। কোচের আশা, এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে তারা।

রবিবার কোচিতে তাদের প্রতিপক্ষ কেরালা ব্লাস্টার্স, যাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বেশ খারাপ। গত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে একটিতেও জিততে পারেনি তারা। এই দুঃসময়ে তাদের হারিয়ে জয়ে ফেরার পরিকল্পনা তৈরি করছেন চেরনিশভ।

এই ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের চেরনিশভ বলেন, “ফুটবলে এমন হয়। বড় বড় দলেরও খারাপ সময় আসে। তবে পরিশ্রম করে যাওয়া ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। দলের খেলোয়াড়দের সেটা বোঝাতে হবে। কী ভাবে পরিস্থিতির উন্নতি করা যায়, সেই নিয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। ওরা বুঝতে পেরেছে। ওরা পেশাদার। ওদের সঙ্গে কাজ করে আমি খুশি। ওরাও এই ক্লাবের হয়ে খেলে খুশি। ওরা ক্লাবের জন্য সেরাটা দিতে চায়। আমার বিশ্বাস, এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারব আমরা। এই ক্লাবের হয়ে খেলাটাই বড় প্রেরণা। তবে ওদের নিজেদের ভবিষ্যতের জন্যও ভাল খেলা উচিত”।

ব্লাস্টার্সের ধারালো আক্রমণ নিয়ে কিছুটা হলেও যে চিন্তায় আছে মহমেডান কোচ, তা তাঁর কথাতেই বোঝা যায়। বলেন, “ওদের আক্রমণ কতটা ধারালো, তা কলকাতার ম্যাচে দেখেছিলাম আমরা। শেষ দিকে ওরা চারজন ফরোয়ার্ডকে নামিয়ে আমাদের হারিয়ে দেয়। আক্রমণে ওরা খুবই শক্তিশালী। সেই ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের এই ম্যাচের পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। তা ছাড়া এখানকার স্টেডিয়ামের পরিবেশে ম্যাচ খেলাও বেশ কঠিন। কারণ, ওদের হাজার পঁচিশ সমর্থক এখানে প্রতি ম্যাচে গ্যালারি ভরিয়ে তোলে এবং প্রচণ্ড হইচই করে। এ রকম পরিবেশের মধ্যে খেলার জন্য আমাদের খেলোয়াড়দের তৈরি থাকতে হবে”।

দলের চোট-আঘাত সমস্যা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি মহমেডান। তা জানিয়ে চেরনিশভ বলেন, “মহম্মদ ইরশাদ, গৌরব বোরা ও জোসেফ আজেই কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে খেলতে পারবে না। তবে একটা সুখবর আছে— আমাদের স্ট্রাইকার সিজার (মানজোকি) দলে ফিরে এসেছে। সে আমাদের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করেছে এবং পরবর্তী ম্যাচের জন্য প্রস্তুত”।

একেই গোলের খরা তাদের। তার ওপর প্রচুর গোল খাচ্ছে তাঁর দল (১১ ম্যাচে ১৯)। এই নিয়ে চেরনিশভ বলেন, “আমরা অন্যান্য দলের তুলনায় শেষ মুহূর্তে অনেক গোল হজম করেছি। আমরা তা জানি। কখনও কখনও তা আটকানো যায়। কিন্তু কখনও তা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। হয়তো আমাদের খেলোয়াড়দের বাড়তি আবেগের কারণেই হয়তো এ রকম হয়”।

ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে এই দলটাকেই গড়েপিঠে নান রাশিয়ান কোচ। বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটি শক্তিশালী দল তৈরি করা এবং আগামী দুই বা তিন মরশুমে লিগে ভাল জায়গায় থাকার জন্য লড়াই শুরু করা। কিন্তু এখন আমরা এমন এক অবস্থায় আছি যেখানে আমরা শেষ স্থানে। আমাদের মূল লক্ষ্য এখন এই অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসা— আমরা লিগ টেবলের একেবারে নীচে থাকতে পারি না। এটা আমাদের জন্য খুবই, খুবই গুরুত্বপূর্ণ”।

Enable Notifications OK No thanks