সেরা ছয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ইস্টবেঙ্গল। ছ’নম্বর জায়গাটা যারা ইতিমধ্যেই দখল করে বসে রয়েছে, সেই জামশেদপুর এফসি-কে সরিয়ে তাদের জায়গায় বসতে গেলে বৃহস্পতিবার তাদের মাঠে নেমে তাদের হারাতে হবে লাল-হলুদ শিবিরকে।
বুধবার ইস্পাতনগরীতে পৌঁছে ক্লেটন সিলভাদের কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত সাংবাদিকদের বুঝিয়ে দিলেন, “এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট জিতে জামশেদপুরকে টপকে ছ’নম্বর জায়গাটা পেতে তারা কতটা মরিয়া। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, জামশেদপুর খুবই কঠিন প্রতিপক্ষ। ওদের খেলার মধ্যে তীব্রতা থাকে। আমরাও ইদানীং ভাল খেলছি। তাই আশা করি ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারব”।
আইএসএলে কখনও টানা দু’টি ম্যাচে জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল এফসি। বৃহস্পতিবার সেই প্রথা ভাঙার সুযোগ লাল-হলুদ শিবিরের সামনে। তাই কোচ মেনে নিলেন, এই ম্যাচ তাদের কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। বলেন, “কাল তিন পয়েন্ট পাওয়া আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল কখনও পরপর দুটো ম্যাচে জেতেনি। তাই এটা আমাদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমাদের খেলোয়াড়দের ফোকাস বজায় রয়েছে। ওরা ম্যাচটা জিততে চায়। আমরা কাল তিন পয়েন্টের জন্য লড়াই করব”।
জামশেদপুরের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র দিয়ে চলতি আইএসএল শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। জানুয়ারিতে সুপার কাপ সেমিফাইনালে তাদের হারিয়েই ফাইনালে ওঠে কুয়াদ্রাতের দল। এ বার তাদের হারিয়ে আইএসএলের সেরা ছয়ে ঢুকে পড়ার সুযোগ তাদের সামনে। চলতি মরশুমে একাধিকবার ইস্পাতনগরীর দলের বিরুদ্ধে মাঠে নামার অভিজ্ঞতা রয়েছে কুয়াদ্রাতের।
সেই অভিজ্ঞতা থেকেই কোচ বলেন, “ফুটবল নির্ভর করে গতিশীলতার ওপর। কোনও দল জয়ে ফেরার পর তারা আশাবাদী হয়ে ওঠে এবং ফর্মে ফিরে আসে। পরপর দুটো ম্যাচে জয় পেলে বা অপরাজিত থাকলে ছন্দে ফেরা সহজ হয়ে যায়। তবে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ওরা (জামশেদপুর এফসি) প্রথমার্ধে মোটেই ভাল খেলতে পারেনি। মুম্বই অনেক ভাল খেলেছিল প্রথম ৪৫ মিনিটে। অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করে ওরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ওরা দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ও তিনটে গোল করে। সে জন্য দলটার প্রতি আমরা যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল”।
দলের তরুণ ফুটবলার সায়ন ব্যানার্জিকে নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী অতীতে আইএসএল জয়ী কোচ। বলেন, “সায়ন খুবই ভাল ফুটবলার। ওর উন্নতি দেখে আমি খুশি। ওকে আমরা সঠিক সময়ে সঠিক সুযোগ বুঝে খেলিয়েছি। যখন প্রয়োজন পড়েছে, তখন ওকে মাঠে নামানো হয়েছে। দলের তরুণ খেলোয়াড়দের যত্ন নেওয়া উচিত বলেই মনে করি আমি। কারণ, ম্যাচে সব সময়, সব কিছু বোঝার মতো পরিণত তারা হয়ে ওঠে না। তাদের অল্প অল্প করে খেলিয়ে তৈরি করে নিতে হয়। আমরা সায়নের পাশে আছি। আশা করি ও আরও ভাল খেলবে”।
এই মুহূর্তে লিগের যা অবস্থা, তাতে সেরা দুইয়ে ও সেরা ছয়ে থাকার দৌড় শেষ পর্যায়ের দিকে এগোচ্ছে। এখন একটি ম্যাচে হারা বা ড্র করা মানে এই দৌড়ে অনেকটা পিছিয়ে যওয়া। সেখান থেকে ফের ওপরে উঠে আসা বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে। সে জন্যই এখন প্রতিটি ম্যাচকে ফাইনাল হিসেবে দেখতে চান কুয়াদ্রাত। বলেন, “আমাদের কাছে এখন সব ম্যাচই ফাইনালের মতো। সেই ভাবেই আমাদের খেলতে হবে। মরশুমের এই সময়টা একটু অন্য রকমের। এখন দলগুলো একটা ভাল জায়গায় যাওয়ার জন্য লড়াই করছে। প্রত্যেকেই পয়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা করছে। সুতরাং আমাদেরও উদ্দেশ্য এখন যতটা সম্ভব বেশি পয়েন্ট তুলে রাখা”।
শনিবার সেই উদ্দেশ্য নিয়েই যে নামবেন, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন ইস্টবেঙ্গল এফসি-র স্প্যানিশ কোচ। সঙ্গে এও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন যে, তাঁর দলের নতুন সার্বিয়ান সেন্টার ব্যাক আলেকজান্দার প্যানটিচকে জামশেদপুরের মাঠে নামাতে পারেন।