প্রায় মাসদুয়েক আগে যে ভাবে ওডিশা এফসি-কে কোনও গোল করতে না দিয়ে আটকে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল, বৃহস্পতিবারও সে ভাবে তাদের কাজ কঠিন করে তুলতে বদ্ধপরিকর তারা। অন্তত সহকারী কোচ দিমাস দেলগাদোর কথাবার্তা শুনে সে রকম মনে হওয়াই স্বাভাবিক।

ডিসেম্বরে চলতি লিগে তাদের প্রথম দ্বৈরথে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে দুর্দান্ত কৌশলী ফুটবল খেলে তাদের আটকে দেয় ইস্টবেঙ্গল এফসি। সারা ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে অনেক এগিয়ে থেকেও ইস্টবেঙ্গলকে শেষ পর্যন্ত বশে আনতে পারেননি সের্খিও লোবেরার দল। সারা ম্যাচে অনেক বেশি পাসও (৪৭৬-২৩১) খেলে তারা। তার পরেও ইস্টবেঙ্গলের দূর্গে হানা দিতে পারেনি। ইস্টবেঙ্গল যেখানে সব মিলিয়ে তিনটি শট গোলে রাখে, সেখানে ওডিশা একটির বেশি শট গোলে রাখতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে লিগ টেবলের এক নম্বরে থাকা ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে নামছে লাল-হলুদ বাহিনী। এই ম্যাচের পরিস্থিতির সঙ্গে অবশ্য সেই ম্যাচের পরিস্থিতি অনেক ফারাক। সেই ম্যাচের সময় ওডিশা ছিল লিগ টেবলের পাঁচ নম্বরে এবং ইস্টবেঙ্গল ছিল দশে। সে দিন পূর্ণশক্তি নিয়ে নেমেছিল দু’পক্ষই। বৃহস্পতিবার ওডিশা পুরো দল নিয়ে নামলেও ইস্টবেঙ্গল রক্ষণে পাবে না হিজাজি মাহেরকে ও ডাগ আউটে পাবে না কোচ কার্লস কুয়াদ্রাতকে। দু’জনেরই কার্ড সমস্যা।

তবে এই নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন সহকারী কোচ দিমাস দেলগাদো, যিনি এই ম্যাচে সাইডলাইন থেকে দলকে পরিচালনা করবেন। বুধবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের কাছে এটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়। এতদিন ধরে আমরা অনুশীলন করছি, ম্যাচের সময় সিদ্ধান্তও নিই সবাই মিলে। এ বারও সেটাই হবে। তাই আমার মনে হয় না, এটা একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। আমরা স্বাভাবিকই রয়েছি, থাকবও। চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তিন পয়েন্ট পাওয়ার জন্য আমাদের যা যা করার তা-ই করব”।

এ দিন সকালে দলের অনুশীলনে ছিলেন না নন্দকুমার শেকর, যিনি গত দুই ম্যাচেই গোল পেয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতির খবরে সমর্থকেরা কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়লেও দেলগাদো তাদের আশ্বাস দেন, নন্দকুমার বৃহস্পতিবারও মাঠে নামবেন। তিনি বলেন, “পরপর ম্যাচ খেলতে হচ্ছে আমাদের। তাই খেলোয়াড়দের যত্ন নিতে হবে। নন্দকে আজ বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে, যাতে ও ম্যাচের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তুলতে পারে। ও কাল খেলার জন্য প্রস্তুত”।

নিজেদের সেরা ছন্দে ফিরিয়ে আনতে পারলে যে ওডিশাকে তারা সমস্যায় ফেলতে পারে, সে রকমই দাবি করে কুয়াদ্রাতের সহকারী বলেন, “আমরা নিজেদের শক্তিশালী করে তুলেছি, যাতে যে কোনও দলের কাছেই কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারি। মোহনবাগান-সহ বড় দলগুলির বিরুদ্ধে আমরা কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছি। ওদের কাজ কঠিন করে তুলেছি। এই ম্যাচটাও সে রকমই হতে চলেছে। ওরা যেমন ওদের খেলা খেলবে, আমরাও আমাদের খেলা খেলব”।

প্রতি ম্যাচেই গোলের সুযোগ তৈরি করেও হাতছাড়া করাটা ইস্টবেঙ্গল শিবিরের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত ১৬ ম্যাচে ১৩১টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছে তারা, কিন্তু ১৮টির বেশি গোল করতে পারেনি। এই সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে দেলগাদো বলেন, “শুধু আমরা নই, সব দলই গোলের সুযোগ হাতছাড়া করছে এই লিগে।

জর্ডন থেকে আসা সেন্টার ব্যাক হিজাজি মাহের এই ম্যাচে না খেলায় রক্ষণের প্রধান দায়িত্ব নিতে হবে লালচুঙনুঙ্গা ও আলেকজান্দার প্যানটিচকে। তাঁদের নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী দেলগাদো।

জর্ডন থেকে আসা সেন্টার ব্যাক হিজাজি মাহের এই ম্যাচে না খেলায় রক্ষণের প্রধান দায়িত্ব নিতে হবে লালচুঙনুঙ্গা ও আলেকজান্দার প্যানটিচকে। তাঁদের নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী দেলগাদো।

সায়ন, পিভি বিষ্ণুদের মতো উঠতি ফুটবলারদের তুলে আনার প্রসঙ্গে দেলগাদো বলেন, “উঠতিদের তৈরি করা আমাদের প্রকল্পের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। আমরা ওদের নিয়মিত নজরে রাখি। যারা প্রতিভাবান, তাদের পেশাদার ফুটবলার হয়ে ওঠার তালিম দিই। ওরাও চ্যালেঞ্জটা নেয়। ওদের মধ্যে শেখার আগ্রহ আছে। আমরা খুশি যে উঠতিদের মধ্যে থেকে আমরা কয়েকজনকে সিনিয়র দলে তুলে আনতে পেরেছি। তারা আমাদের সঙ্গে কাজ করছে, ভাল পারফরম্যান্সও করছে। ক্লাবের ভবিষ্যতের জন্য এ ভাবেই কাজ করে যেতে হবে এবং আরও কয়েকজন উঠতি খেলোয়াড়কে সুযোগ করে দিতে চাই”।

Enable Notifications OK No thanks